রুমালচুরি- ১৬



  

       কবির নাম, বয়স, লিঙ্গ, ঠিকানা ইত্যাদি যা কিছু কবিতার জন্য জরুরি নয়, তা আমরা মুছে দিয়েছি। আর এভাবেই ১০টি কবিতা পাঠানো হয়েছে অন্য এক কবির কাছে- আলোচনার জন্য। শুধু ১০টি কবিতা, আগে পরে নাথিং। আমাদের সাথে রুমালচুরির এই খেলা খেললেন ১৯ জন কবি।


       এখানেও কবির নাম ছাড়া ১০টি কবিতা রাখা হল, সঙ্গে থাকলো আলোচনা। কবির নাম জানার রাস্তা কবিতার নীচ দিয়ে গেছে। তবে আমরা বলবো রুমালচুরির এই খেলায় আপনিও থাকুন। কবির নামটা না হয় একটু পরেই জানলেন।




  ১০টি কবিতা


  অন্যান্য শব্দকানঃ ১

ধন্যবাদ, নিরোধক, সামান্য বিবর্ণ পরিতি 
বিষাদ হবার আগে কুড়িয়ে নিয়ছ ওইখানে 
হবে হোক সস্তা পাখি আহা নিরীহ মতন
ড্রেনের দুপাশে জেগে দলীয় কোন্দল, রাগ হল 

প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে বলি, দেখা হোক
তোমার তেষ্টায় হু হু ফেটে যাচ্ছে বুক

পরিপাক করে নিও নিখাদ জঙ্গল...

অন্যান্য শব্দকানঃ ২

দংশন পেরেছে সেই কথাগুলো যাহাদের
সাধ ছিল শুধু। আর তার বাইরের নাকে
অম্লান নেশার ঘোর সব ছিন্ন করে ভিন্ন
এক বাহারের ছবি এঁকেছিল...

একদাজীবিত চাওয়া ঘুরেফিরে আসে দোটানায়
যেন সে ইঁদারা এক বহুদিন বুজে গেছে স্মৃতির পরতে
মায়াজল উঠে আসে আজও তবু স্বপ্নের ভেতর
দরজা এখনও হাট, ফিরে তাকানোয়...  

অন্যান্য শব্দকানঃ ৩

আমাকে কি ভুলে যাবি? এরকম প্রশ্নের ভেতর
ছেড়ে দিয়ে যারা চলে যায়
তাদের সারল্য পোড়ে এই গাঢ় দেনা-পাওনার
মরুদিনে...

তাদের তরঙ্গ আজও ফিরে আসে
দীর্ঘ প্রতীক্ষিত কোনও উত্তরের দিকে

অথবা প্রশ্ন আজ কীরকম হতে পারে সেকথাও
থেকে যায় প্রশ্নের মতন...

অন্যান্য শব্দকানঃ ৪

গাছ নিয়ে কথা বলো, এমনকী পাথরও ছুঁয়েছ
তবুও কুশলকথা, কিছুটা ছায়ার আবরণ
প্রলম্বিত শরীরে নুয়েছে

দূরত্বের জন্য কিছু ঝাপসা হয় মুখ

শরীর শরীর আমি তার পর অন্য কিছু যদি
সেটুকু তোরই জন্য, তোমারই ফসল  

অন্যান্য শব্দকানঃ ৫

অত্মরক্ষা কেন আসে আত্মার ভেতর!...

সবটুকু ছেড়ে দিলি নদীটার নামে
আবার এসেছি ফিরে সহজের অনেক রকম 
ডুবে যাওয়া
সামান্য রক্তদাগ মুছে দিই কথায় কথায়
দীর্ঘ হয় ক্ষত ...

আর কোনও ছদ্মনাম লেগে নেই জলের গোপনে
আর কোনও যাব কি যাব না ...

পুরো মরে যাওয়া আর পুরো বেঁচে থাকা নিয়ে
মধ্যবর্তী অনন্ত বছর।

অন্যান্য শব্দকানঃ ৬

থেমে যাওয়াগুলো বলো
মাঝখানে বলো, যেভাবে মানিয়ে নিলে যতি...
নামের সুরের সাথে হেঁটে যাওয়া
বলা হয়ে উঠবেনা জানি। 

যত্নে বসাও, বসি
ধুলো ঝেড়ে আসন পেতেছ
কাটাকুটি খেলাগুলো দেখাও হাসিতে
বলছনা সারাদিনের জমেওঠা বালি।

বাজছে অনেক তার, চাতুরী-বিহীন
তুমি সেই বাজনার দিকে
আসো-যাও, দ্যাখো

শব্দের দিকে মুগ্ধ-চোখ-

অন্যান্য শব্দকানঃ ৭

সবকিছু গন্ধে ফালা ফালা, থেকে যাওয়া ছায়ায় বিক্ষত

আরেকটু পর থেকে পেছনের চলাফেরা
প্রতিধ্বনি হয়... অজুহাতে মেহেন্দি সেজেছে
তারও তো নিজস্ব ক্ষমতা, হাওয়া ধরে রঙের মাতাল

কতদিন পার করে কীরকম হেসে হেসে প্রমাণেরা আসে
শব্দহীন, সংকোচের যোনি আর শুঁকেও দেখে না
হঠাত অবাক ফলে বিবস্ত্র বাগান আর বসে থাকে মাথাহীন স্বপ্নবসতি

এইটুকু পথ হয় এতখানি ভাবনার গানে
কানে মুখ রেখে ...

অফুরান

জেনেছ, তোমার জন্য দরকারি রেখা

এঁকে  দেব দুধবতী গাই
এবং প্রচুর দিয়ে দেব 
চিরশ্যাম ঘাসের চারণ

ফেরতের থেকে ভিন্ন দিকে
বাঁকা চোখ, সুঠাম হৃদয়
দিতে দিতে চিহ্নের মতন, সঙ্কেতের দাগ
আলুথালু ভাসমান টান

এই আছি, জ্ঞানসহ, রণমুখি ট্র্যাক 
শ্রমে শ্রমে জল খসে, পোকা

আজ আছি, আজ আছি, আজ
কাছে দূরে খুলি বহুভাঁজ

চলমান শান্তিবটি
তুমি তো দুহাত তুলে চলে যাও
ফেরতের থেকে ভিন্ন দিকে
বাঁকা চোখ, সুঠাম হৃদয় 

ঘর খুলে থাকে, অসামান্য বক্র চাউনির
নিজের ক্লাউনে ভাঙে আয়নার ছবি 
জ্ঞান পড়ে থাকে
অজীবিত ধুলো
সংগঠনের বালি চোখে পড়ে
খুব সোজা হয়ে যায় কথা দেওয়া-নেওয়া

বাঁকাগুলো সোজা হয়ে আবার অন্য বাঁক করে

বহুকাল নাইতে নামনি অভিমানে 
আকাশের ছাদের তলায়
উইথড্র করেছ চুমু 
বুকজুড়ে ব্লকেজের চাবি
এসএমএস মুছে চোখে রুমাল বোলাও

পাকা চুল, ডাক দিলে এই বর্ষাদিনে
মেঘের ভেতরে ক্রমে নিচু হয় রোদ… 

ছড়িয়ে গিয়েছ আহা কী অমৃতক্রিয়া
রক্তের ভেতরে সমীচীন ...

টুকে রাখা সরাসরিগুলো জেগে ওঠে
পাঠ হয় কত শিলালিপি, খড়কুটো নিয়ে ভাসে মধু...    

ভ্রমর ও কুসুমাদি

ক্ষয়ে যায় ঘুড়ির পতন; দেখ, মাথা-উঁচু সময় এখনও
মেঘের আকাশ ভেবে বিষণ্ণ হয়েছে...
ভেঙে দিলে অভিমান আরেকটু কেঁদেছ; বিশ্বাস তখন, তবু
ভাঙতে শেখেনি  

নেমে আসে ভ্রমর ও আপ্লুত মাছি যুগপৎ সেই সূচনার
এবারও নতুন জামা কিংবা বোতল
অথবা পুস্প-গোছা  তির তির বয়ে যায় ঘুমপাড়ানিয়া
জ্ঞানশূন্য পাঠ-পাঠান্তরে ভেসে থাকে পাথরের হাসি 
নিজের অশ্রুত ছবি বাজে...

থেকে গেল ঘনঘোর গান; বলে ফেল, ছুটির দিন তো আছে
পাশ থেকে লং শর্টে খুব স্লো ফেড হল ব্যস্ততার চাবি
টুকে রাখলাম লিপি,গুহা,প্রতিধ্বনি,চাওয়া... 
পাওয়া যাবে নদী কমে গেলে, জানি
সেইখানে ডুবেযাওয়াগুলো আছে

প্রিল্যুড আবার ফিরে আসে; বিকশিত
ফিরিয়ে মুখের কথা, পায়ে পায়ে রেখারা এসেছে 
লুকোতে পারেনা গুনগুন... কত সীমাজ্ঞান সয়েছ পাপড়ি
বয়েছ জাগর; এই গর্ভ
স্বেচ্ছা সঞ্চারিত মধু রাখা থাকে তৃতীয়-বিহীন...

পয়েন্টব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জের কবিতা

ধোওয়া হচ্ছে আঙ্গুল...
দীর্ঘ আলাপ
লয়
নৃত্যমুদ্রা
লালিত্যপ্রধান... বুজে আসা চোখ
গড়ে তোলে অপূর্ব নিভাঁজ

স্বপ্ন গঠন বায়ু বিলীন এবং
তোমার সংকেত পেয়ে জল, স্মৃতির অ্যালকোহলে কাঁপি
মাছ হোক পরীকথামতো
আমি চলি অযোনিসম্ভব
মিঠে চুল, আর এক রেখা
যারা বলে তারা বলে হা হা

বেশ তবে পয়ার রচেছ, পায়ূদ্বারে মোহময় ইয়ে 

খেলতে খেলতে এই কেঁদে ফ্যালা, ক্রীড়ারই বিস্তার ...




 
  এইটুকু পথ হয় এতখানি ভাবনার গানে
আলোচনা করলেন স্বপন রায়  


       কবিতার শরীর, শরীরইমন নেইমন কে দেখেছে? কবি শরীরে প্রোথিত করে মন, কবিতা , হায় অশরীরি কবিতায় সেই মনের ব্যবহার কখনো বিদ্যুৎপ্রভ, কখনো বা তমসাছন্নহায়, কারণ কবির অসহায়তাই তার সহায়কবি হায় বলায়, হায় বলেনাযে দশটি কবিতা নিয়ে লিখছি, সেই কবিতাগুলোয় কবি এক সক্রিয় মিথষ্ক্রিয়তায় আছেন, যেন তার বলা আর না-বলার ভেতরে একটি তৃতীয় পক্ষ আছে, আর বিস্তৃত করে চলেছে কবিকে!

থেকে গেল ঘনঘোর গান; বলে ফেল, ছুটির দিন তো আছে
পাশ থেকে লং শর্টে খুব স্লো ফেড হল ব্যস্ততার চাবি
টুকে রাখলাম লিপি,গুহা,প্রতিধ্বনি,চাওয়া... 
পাওয়া যাবে নদী কমে গেলে, জানি
সেইখানে ডুবেযাওয়াগুলো আছে

       এই যে থেকে যাওয়া, একটা যোগসূত্রের দাবী নিয়ে এতো কবিই দেখতে পায়ত্রিনয়ন কবিরই দেন, শিব উপলক্ষ্য মাত্রনদী কমে যাওয়াটা কবির ইচ্ছেপূরণের মাধ্যম, ডুবে যাওয়ার স্মৃতি যদি জ্যান্ত হয়ে ওঠে, আলোচ্য কবি সেই হয়েওঠাটুকু ভেবেছেনবাকিটা পাঠকের

       ‘অন্যান্য শব্দকানসাতটি কবিতার একটি সিরিজফিরে দেখা, ফেলে আসাকেকবি কিন্তু বিষয়কে সূচীমুখে নিয়ে গেছেন, তাকে আবদ্ধ করে রাখেন নিঅভিজ্ঞতার নিরিখে যে অন্তরাবোলোকন হয় তাতে র‍্যাশনাল হওয়ার সম্ভাবনা থাকেই, এই কবি সে পথে যাননিতিনি লিখছেনঃ

কতদিন পার করে কীরকম হেসে হেসে প্রমাণেরা আসে
শব্দহীন, সংকোচের যোনি আর শুঁকেও দেখে না
হঠাত অবাক ফলে বিবস্ত্র বাগান আর বসে থাকে মাথাহীন স্বপ্নবসতি

       কবিতার এইতো জগত, ‘মাথাহীন স্বপ্নবসতিসেখানে পড়শি আছে কিনা কে জানে, শুধু এক ধু ধু উপলদ্ধি ঘুরে বেড়ায়, কবি তার আশ্চর্য লেখাগুলোয় ধরেছেন এইসব অধরা অবৌদ্ধিক স্বপ্নবসতিগুলোএই অপ্রাপ্তি না থাকলে কবিতাই হতনা, সবকিছু গল্প আর প্রবন্ধ হয়ে যেত! ‘তুঝসে মিলনে কো বেকরার থা দিল/ তুঝসে মিল কর ভি বেকরার রহা!’ ( রসা চুঘাতি)দেখার জন্য মন উচাটন, দেখার পরেও! অতৃপ্তিই কবিতার জনকতৃপ্ত মানুষ কবিতা লেখেনাআলোচ্য কবির কিছু কবিতাংশ দেখা যাকঃ

. 
বাজছে অনেক তার, চাতুরী-বিহীন
তুমি সেই বাজনার দিকে
আসো-যাও, দ্যাখো

শব্দের দিকে মুগ্ধ-চোখ

.
সবটুকু ছেড়ে দিলি নদীটার নামে
আবার এসেছি ফিরে সহজের অনেক রকম 
ডুবে যাওয়া
সামান্য রক্তদাগ মুছে দিই কথায় কথায়
দীর্ঘ হয় ক্ষত ... 

.
প্রসঙ্গ পাল্টিয়ে বলি, দেখা হোক
তোমার তেষ্টায় হু হু ফেটে যাচ্ছে বুক

পরিপাক করে নিও নিখাদ জঙ্গল...

       কবি শব্দসঞ্চারী নন, ভাবনাসঞ্চারীশব্দের দিকে মুগ্ধচোখে তাকানোটা একটাপাসার বাইঅভিজ্ঞতা যা আমাদের প্রতিনিয়ত হয়ে থাকেকবি তাঁর মুন্সীয়ানার চূড়ান্তে গিয়ে এই ভাবনামথিত সারাৎসারের কবিতা লিখেছেন, খুব সহজ নয় এমন লেখাঅবচেতন আর পরাচেতনে ভ্রাম্যমান কবি এক অতিসুক্ষ্ম অনুভবের দুনিয়ায় নিয়ে গেছেন পাঠককেযা বোধসঞ্জাত, কিছুটা অপার্থিবও বটে!কবির কল্পনা আর  বাস্তবের দ্বন্দ্বে ভেসে উঠেছে এক শব্দমোহমাখাচলমান শান্তিবটি’, ‘অজীবিত ধুলো

       কবি ভাষাগত অন্যতায় স্থাপিত ননবরং যা আছে তাই দিয়েই সাজিয়েছেন তাঁর অনবদ্য কবিতাগুলি।তিনি যাত্রী নন, অথচ যাত্রাময় তাঁর দেখা! একটা পুরো কবিতা পড়া যাকঃ

ধোওয়া হচ্ছে আঙ্গুল...
দীর্ঘ আলাপ
লয়
নৃত্যমুদ্রা
লালিত্যপ্রধান... বুজে আসা চোখ
গড়ে তোলে অপূর্ব নিভাঁজ

স্বপ্ন গঠন বায়ু বিলীন এবং
তোমার সংকেত পেয়ে জল, স্মৃতির অ্যালকোহলে কাঁপি
মাছ হোক পরীকথামতো
আমি চলি অযোনিসম্ভব
মিঠে চুল, আর এক রেখা
যারা বলে তারা বলে হা হা

বেশ তবে পয়ার রচেছ, পায়ূদ্বারে মোহময় ইয়ে

খেলতে খেলতে এই কেঁদে ফ্যালা, ক্রীড়ারই বিস্তার ... (পয়েন্টব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জের কবিতা)

এই পংক্তিটা সহজেই একটা লাইনে লিখে ফেলা যেতঃ

ধোওয়া হচ্ছে আঙ্গুল...
দীর্ঘ আলাপ
লয়
নৃত্যমুদ্রা
লালিত্যপ্রধান

       কবি আলাপ, লয়, নৃত্যমুদ্রার এফেক্ট নিয়ে এলেন তাকে ভেঙে দিয়েতিনি লিখছেন, ‘ মাছ হোক পরীকথামতো/আমি চলি অযোনিসম্ভবছোট ছোট নির্মাণদক্ষ, কিন্তু কল্পভাবনায় নিষিক্তকবিতা আরেক কবিতাকেই উদ্দিষ্ট করেছে এখানেজীবন, দ্বিধাদীর্ণ হলেও রচিত করতে থাকে জীবিতের সাত, আট, নয় কাহনকবি তার ভেতরেই নিজেকে নিজের থেকে বিচ্ছিন্ন করে নিজের লেখার দিকে তাকিয়ে লেখেনঃ

বেশ তবে পয়ার রচেছ, পায়ূদ্বারে মোহময় ইয়ে

খেলতে খেলতে এই কেঁদে ফ্যালা, ক্রীড়ারই বিস্তার ...

       কবিতাটা শুরু হচ্ছে আঙুলের ধুয়ে ফেলা নিয়ে যা অসরলঅমতি কবিতাকে নানা পথ ঘুরিয়ে এনে ফেলেছে ক্রীড়ার বিস্তারেখেলাই তো! মনে পড়ছে পল এলুয়ারের ছোট্ট কবিতাটাঃ

Life is truly kind
Come to me, if I go to you it’s a game,
The angels of bouquets grant the flowers a change of hue.’

       কবিতার গঠনে এই খেলা লুকিয়ে থাকে ব্যপ্ত হয় কখনো, কখনো বা মিত হয় আমি যাঁর কবিতা নিয়ে লিখছি তিনি হাতের সব তাস দেখাতে চাননা তিনি জানেন মায়া আর রহস্যের পার্থক্য মায়া অভেদ্য, অলৌকিক তার প্রভাব অবাস্তব রহস্য ভেদ্য রহস্য লৌকিক কবি এই দুটো অনুভবকেই গ্রাহ্য করেছেন তাঁর লেখাগুলোয়ভ্রমর কুসুমাদিকবিতাটা পড়া যাকঃ

ক্ষয়ে যায় ঘুড়ির পতন; দেখ, মাথা-উঁচু সময় এখনও
মেঘের আকাশ ভেবে বিষণ্ণ হয়েছে...
ভেঙে দিলে অভিমান আরেকটু কেঁদেছ; বিশ্বাস তখন, তবু
ভাঙতে শেখেনি

নেমে আসে ভ্রমর আপ্লুত মাছি যুগপৎ সেই সূচনার
এবারও নতুন জামা কিংবা বোতল
অথবা পুস্প-গোছা  তির তির বয়ে যায় ঘুমপাড়ানিয়া
জ্ঞানশূন্য পাঠ-পাঠান্তরে ভেসে থাকে পাথরের হাসি 
নিজের অশ্রুত ছবি বাজে ...

থেকে গেল ঘনঘোর গান; বলে ফেল, ছুটির দিন তো আছে
পাশ থেকে লং শর্টে খুব স্লো ফেড হল ব্যস্ততার চাবি
টুকে রাখলাম লিপি,গুহা,প্রতিধ্বনি,চাওয়া... 
পাওয়া যাবে নদী কমে গেলে, জানি
সেইখানে ডুবেযাওয়াগুলো আছে

প্রিল্যুড আবার ফিরে আসে; বিকশিত
ফিরিয়ে মুখের কথা, পায়ে পায়ে রেখারা এসেছে 
লুকোতে পারেনা গুনগুন... কত সীমাজ্ঞান সয়েছ পাপড়ি
বয়েছ জাগর; এই গর্ভ
স্বেচ্ছা সঞ্চারিত মধু রাখা থাকে তৃতীয়-বিহীন...

       শেষ শব্দটা তৃতীয়বিহীন ডাইমেনশন আর তৃতীয় থাকছে না যে পক্ষে তার অবস্থান সেই পক্ষে বিহীনতা রাজ করছে একেবারে প্রথপমে এই কবিতাটি থেকে একটি উদ্ধৃতি দিয়েছিলাম নিজের অশ্রুত ছবির বাজনা শুনছেন কবি দেখছেন থেকে যাওয়া ঘনঘোর গানটিকে কবি জীবনের বাইরে নন আবার জীবিত সবাই কবি নন অন্যদিকে জীব/অজীব সবকিছুই কবিতা স্বভাবতই কবি লিখেছেন, প্রিল্যুড আবার ফিরে আসে...

       কবি ভাবনাপথের পথিক আলোচ্য লেখাগুলোয় আমরা কবিকে এক নিপুণ কারিগর হিসেবেও পেলাম এই কবি অনুভবপন্থী তো অবশ্যই কিন্তু অতীত আর বর্তমানের সীমারেখায় দাঁড়ানো এক অসামান্য লিখিয়েও! কবিতাকে তিনি স্থাপিত কলা কৌশল দিয়েই ছুঁতে পেরেছেন আমি এই লিপিবদ্ধ কবিতাগুলি পড়ে কিছু লেখার সুযোগ পেলাম এই সুযোগ দেওয়ার জন্য টিম রেহেলকে ধন্যবাদ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন