রুমালচুরি- ১৭



  

       কবির নাম, বয়স, লিঙ্গ, ঠিকানা ইত্যাদি যা কিছু কবিতার জন্য জরুরি নয়, তা আমরা মুছে দিয়েছি। আর এভাবেই ১০টি কবিতা পাঠানো হয়েছে অন্য এক কবির কাছে- আলোচনার জন্য। শুধু ১০টি কবিতা, আগে পরে নাথিং। আমাদের সাথে রুমালচুরির এই খেলা খেললেন ১৯ জন কবি।


       এখানেও কবির নাম ছাড়া ১০টি কবিতা রাখা হল, সঙ্গে থাকলো আলোচনা। কবির নাম জানার রাস্তা কবিতার নীচ দিয়ে গেছে। তবে আমরা বলবো রুমালচুরির এই খেলায় আপনিও থাকুন। কবির নামটা না হয় একটু পরেই জানলেন।




  ১০টি কবিতা


   গাধা

.

অনেক কথা বলতে বলতে ক্লান্ত 'য়ে গেছি,আজ না-হয়
নীরবতার খেলা,যদি স্বস্তি না-পাই, তোর সঙ্গে
গাধা পেটাপিটি খেলবো

তোর নামে এই একটাই খেলা, তোকে পুরস্কৃত 'রেছে মনুষ্য সমাজ

.

নিজেরাই গাধা সেজে একে অপরকে পেটাপিটি করে
তোর নামে এই একমাত্র খেলা, কি পুরস্কার চাইবি আর
এই খেলায় কোনো প্রহসন নেই

পুরস্কার পরিস্কার

.

ভগবানকে ধন্যবাদ এ্যাদ্দুর আমাকে টেনে নিয়ে এলো
তুই আমার সঙ্গে থাকলেও
তোকে টানতে হয়নি কোথাও, একবারও

নোখ-চুল বাড়তেই থাকে, ঘুমও কমে না, ভার বাড়তেই থাকে
মনের ভারতো আছেই, তার ভাগ নিতে
চারদিকে কেউ নেই

আমি ভাগ্যবান তোর চোখেই পড়েনা

.

আমি অনেকসময় থুতুর সঙ্গে লেপ্টে থাকি, দুধ যে শুধু
শাদা নয়, থুতুও সাদা- বুঝেছি, বুঝেছি
কলসির কানার মর্ম, রক্ত ঝরেনি, মধু ঝরেছিল

দু'হাত বাড়ানো প্রেম

ঘৃণা যদি ধাক্কা মারে, তুই ধাক্কা মারবিনা পিছন পায়ে

দেখতে হয় ঘৃণার রূপ ঘৃণার সঙ্গে থেকে

.

জীবনতো চারপায়ের সঙ্গে কেটে যায়

জীবনতো চারপায়ে কেটে যায়

অবজ্ঞা আর অপমানের ভার কি যে মহাভার
কোথায় যে নাবাবো
জায়গা নেই

দু'ফোঁটা চোখের জল ফেলার জমি নেই

.

রাত্রি নিয়ে যাবে না মাঠের দিকে

রাত্রি শুধু ঘুমের

ঘুমকে আহার 'রে ঘুমিয়ে থাকা

তুই ঘুমো
সকালে দেখবো, ঘাসের জেগে থাকা, 'রে বেড়ানো
আমার বুকেও দেখবি, আমার বুকের লোম
তোর জন্য কতটা সতেজ

তোর জন্যই আমার চুমো

সঞ্চয় করি নিজের কাছে তোকে দিয়ে যাব

.

কার সঙ্গেই বা পরিচয় করি, কত পোকামাকড়
নানারঙ নানা আকার, কাউকে কাউকে রহস্যময় লাগে

কোন পোকা ছিদ্র 'রে গেল পাতার রূপ পাতার রস?

কখনও কখনও পাগলের চিৎকার; মানুষ খা, মানুষ খা

কে মানুষ? কাকে খাব?

আগে শূন্য মাঠে ঘাসের জন্ম হোক

.

কোথাও ডাকছে মুরগি, গাছপালা পাখা মেলছে
রাস্তায় দু'একটা কুকুর, কুকুরের সঙ্গে,
এগিয়ে আসছে অস্পষ্ট এক পথচারি

ভোরের শুকতারার মুখোমুখি আমি

দু'জনেরই কথা নেই

ব্যথাও কি আছে?

গোচারণে চলে যায় একটি গাধাও

.

ওরা আয়নার কাছে যায়, মুখ দেখে, সাজগোজ করে
ওরা আয়নার কাছে কাঁদে, হাসে
ওরা আয়নাকে আদর করে

ওরা সত্য, ওরা সুন্দর

তোর এসবের বালাই নেই, তোর চিরুণিও নেই

১০.

একে চন্দ্র দুইয়ে পক্ষ
লেখাপড়া হয়, পড়াশোনা করে

বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা তুই বাইরেই থাক

আমিও বাইরে আছি, বাইরেরও বাইরে যেতে চাই
রাস্তাটা কোনদিকে বলতে পারবেনা কেউ, আপাতত
চক ডাস্টারের বোঝপড়া দেখছি

আমাদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে রোদ-জল-হাওয়া
এটুকু পাওনা, কড়ায়-গন্ডায় বুঝে নিতে পারিনা 




  গাধাকে বিনির্মাণের খেলা
আলোচনা করলেন যশোধরা রায়চৌধুরী  

       অধুনা কবিতা লেখা এক রকমের ভারবহনের কাজ যুগ যুগান্ত ধরে কবিতা বুনে ফসল ঘরে তুলে কবিকুল যে বিশাল শস্যভাণ্ডার বানিয়ে তুললেন, তাকে ঝাড়াই বাছাই করার কাজ একদিকে, অন্যদিকে বহুকর্ষিত মাটিতে আবার ফসল বোনার চাপ যে ফসলকে অতুলনীয় নিজস্বতায় ভরে দিতে হবে , নতুনতায় পুনরাবিষ্কার করতে হবে বলে কবি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অথচ উপাদান পাল্টাচ্ছে না জীবনের সেই পুরনো উপাদান, আর আমাদের ভাষার সেই কলেবর একই গ্রামার, এক কনস্ট্রেন্ট বিশেষ্য বিশেষণ ক্রিয়ার বন্ধন এর ভেতর থেকে নতুন কিছু বুনতে হবে, গজাতে হবে, ঘরে তুলতে হবে এই ভারাক্রান্ততা আজকের কবিতাকে ক্লান্ত করে

       হয়ত কবিরা ক্লান্তির কথা লিখতে শুরু করেন তাই কিন্তু কবিতার নিজস্ব ভর টানে, সে কবিতার ভেতরে একবার ঢুকে গেলে তাঁদের ক্লান্তি কেটে যেতে থাকে, আবার সতেজ চারাগাছের সবুজতা তাঁদের আকৃষ্ট করতে থাকে এবং কিছু পরে তাঁরা নিজস্ব ভাষা স্বরে স্বস্থিত হতে হতেই তৈরি করে ফেলেন নিজের ঘরানা

       প্রতীক ছবি চিত্রকল্প প্রতীকচিত্র রূপ রূপক আঁকায়, নাটকে, এবং কাব্যে আদিম গুহামানব থেকে মধ্যযুগীয় মানব সকলেই ব্যবহার করেছেন আজকের কবিও করলেন গাধা নামক রূপক বা প্রতীকটি একাধিকবার একাধিক কবিকে তাড়িত করেছে গাধার প্রতীকের শুরু আমাদের শৈশবে এই নিরীহ জন্তুটি কতটাই না ব্যবহৃত একেবারে চার পাঁচ বছর বয়সে পড়া যাবতীয় কাহিনিতে ঈশপের গল্পে, রূপকথায়, লোককথায় বেচারি গাধা অসংখ্য কাহিনির নায়ক আমাদের সামাজিক বেড়ে ওঠায়, আমাদের যৌথ অবচেতনে, গাধা এক কাতর, অসহায়, বোকা নায়ক তার দুষ্টুমির ফল হাতেনাতে মেলে, নুনের বস্তা তুলোর বস্তার গল্পে অধিকাংশ কাহিনিতে মন প্রাণ ঢেলে  তার গান গাওয়ার মূল্য জোটে পিটুনি  তার জীবনে বাবা আর ছেলের ভার বহনের ইতিহাস আছে আর সত্য কথন মিথ্যা বলা, ফাঁকি, চালাকি, বোকামি সব কিছু গল্পের বিষয় গাধা প্রতীক হিসেবে লোক কাহিনিকারদের কাছে এত প্রিয় কেন তা এক অন্য গবেষণার বিষয় নিশ্চয় কিন্তু হেন গাধার জন্য কবিরা একাধিক সিরিজ লিখেছেন সেই প্রাচীন সংস্কারকে কাজে লাগিয়ে বা জোড় খুলে ভেঙ্গে পরখ করে দেখে আবার জোড়া দেবার জন্যই তো!

       মনে পড়ছে শুভব্রত চক্রবর্তীর গাধা নামে গোটা একটা বইএর কথা বা একটি পত্রিকার কথা যার নাম গাধা

       এখানেও, গাধাকে বিনির্মাণের খেলা খেলেছেন একজন কবি সাহসী, সৎ এবং ভাংচুরে দক্ষ আশ্চর্য এই খেলা, কবিতায় যা করেন কবিরা অজড়, অনড়, অচলায়তন ভাবনার পিন্ডকে শিশুর নির্মল আনন্দে খুলে খুলে দেখেন উলঙ্গকে জিগেস করতে পারেন, রাজা তোর কাপড় কোথায়? আবার সবচেয়ে দুরূহ , চেপে বসা ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন, কেননা, তাঁর কোন পূর্বধারণা নেই, অথবা পূর্ব ধারণার প্রতি শ্রদ্ধা নেই অচলা ভক্তি নেই সামাজিকীকরণের সব সূত্রের তিনি দফারফা করতে পারেন

       এই সিরিজে গাধার সামাজিকীকরণ, তার ছাপ্পা, তার নামের অপমান, ভেঙে ভেঙে প্রশ্ন তুলছেন কবি বার বার গাধার সঙ্গে কথোপকথনে নিজেকে গাধার সঙ্গে একাত্মীভূত করছেন, তাই, গাধা আর কবিরআমিমিলে মিশে যাচ্ছে কিন্তু বার বার আলাদাও হচ্ছে দূর থেকেও দেখছে

       যুগবাহিত সামাজিকীকরণের বিষাদ ক্লান্তি আছে এখানে, হয়ত শুরুতে যা বললাম, কবিতার ক্লান্তিও আছে

        আশ্চর্য এক বিষণ্ণ ক্লান্ত স্বরে কবি তাঁর দিক থেকে অ্যাপ্রোচ করছেন গাধাকে, কাছে আসতে চাইছেন গাধার অনেক কথা বলতে বলতে ক্লান্ত 'য়ে গেছি,আজ না-হয়/নীরবতার খেলা,যদি স্বস্তি না-পাই, তোর সঙ্গে/গাধা পেটাপিটি খেলবো/তোর নামে এই একটাই খেলা, তোকে পুরস্কৃত 'রেছে মনুষ্য সমাজ

       সামাজিক নির্মানের কথা সরাসরি এসে পড়ল এখানেই সমাজের হাস্যকর নিয়মাবলীকে তুচ্ছতাচ্ছিল্যও এবং বাইরের এইসব বৈষম্য থেকেও ক্রমশ ভেতরের ভারাক্রান্ততার কথাও এল


নোখ-চুল বাড়তেই থাকে, ঘুমও কমে না, ভার বাড়তেই থাকে
মনের ভারতো আছেই, তার ভাগ নিতে
চারদিকে কেউ নেই

       এখানে অন্যভাবে ভারাক্রান্ততাকে অ্যাপ্রোচ করছেন, কাছাকাছি আসছেন কবি আমাদের জীবনের সার সত্যগুলির মধ্যে একটি এই নোখ চুল বাড়াভার বাড়া... মনের ভার... একাকীত্বচিরন্তন কাব্যিক বিষাদে এসে পৌঁছল কবিতা

অবজ্ঞা আর অপমানের ভার কি যে মহাভার
কোথায় যে নাবাবো
জায়গা নেই
এগিয়ে পিছিয়ে দেখলে এই পুনরাবৃত্তি চলছে পরেও, কিন্তু আসছে প্রেমের কথা ঘৃণার কথা আরো আরো জরুরি সব কথা

       এ পর্যন্ত আমি বলব, প্রতীককে আশ্রয় করে কবির চলা শুরু হয়েছিল ধীর পদে অত্যন্ত করুণ ভাবে খুব যে প্রত্যাশা জাগাচ্ছিল তা কিন্তু নয় কিন্ত কবির চলা তো! আর কবিতার সুঁড়িপথ , তা এমনি, ক্রমশ চলাকে গতিমান করে ক্রমশ নানা রোমাঞ্চ গজিয়ে দেয় পথে সুতরাং তার পরের পরে, আরো পরে, কবিতাগুলোতে ধার আসছে আরো সত্য আসছেআরো অদ্ভুত সব কথা , ভাবনা আসছে আর আগের , পূর্ব লালিত ভাবনাকে তছনছ করছে

পূর্ব লালিত কথা কী? যে, দুধ সাদা... পূর্ব লালিত কথা কী? যে, থুতু নোংরা

       কবি আবিষ্কার করলেন, “আমি অনেকসময় থুতুর সঙ্গে লেপ্টে থাকি, দুধ যে শুধু/শাদা নয়, থুতুও সাদা আর অমনি, চমকে দিলেন অতর্কিত আক্রমণ যেন এই তছনছ করাটাই কবির কাজ

       এর পর বার বার এইভাবে চমকে দেবে ছবিগুলোরাত্রি শুধু ঘুমের/ঘুমকে আহার 'রে ঘুমিয়ে থাকাপেলাম তারপর পেলাম আশ্চর্য চিত্রকল্প , বুকের লোমের সঙ্গে ঘাসের সতেজতার তুলনা ঘাস জমিতে চরে বেড়ানো একলা গাধার সুররিয়ালিস্ট বা ম্যাজিক চিত্রকল্প, সেটা যদি ঘটে যায় কবির সেইআমি বুকের ওপরের ঘাসজমিতে যা প্রকৃত প্রস্তাবে বুকের রোমশ অধিত্যকা?

       কত পোকামাকড়/নানারঙ নানা আকার, কাউকে কাউকে রহস্যময় লাগে/কোন পোকা ছিদ্র 'রে গেল পাতার রূপ পাতার রস?

       শুধু গাধা নয়, কুকুর পোকামাকড়, সমস্ত জীবজগতের সঙ্গে সম্পর্কায়িত হচ্ছে কবিতাগুলি এবার আর ততটাই দূরে সরে যাচ্ছে মানুষের থেকে, কেননা মানুষ ফেক, মানুষ বানানো, মানুষ মিথ্যাচারী ঠগ

তাই তো,

কখনও কখনও পাগলের চিৎকার; মানুষ খা, মানুষ খা

কে মানুষ? কাকে খাব?

আগে শূন্য মাঠে ঘাসের জন্ম হোক

  
      আসলে সবুজ কোথাও নেই, সতেজতা কোথাও নেই সেগুলো আসুক, আসুক প্রকৃতি জগত, আসুক প্রাণী জগত মানুষ পাশে সরে যাক, আমাদের ভাবনার আড়ালে যাক মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতা অনেক পরে, আগে ঘাসের প্রতি দায়বদ্ধ থাকতে শিখি আমরা
কোথাও ডাকছে মুরগি, গাছপালা পাখা মেলছে
রাস্তায় দু'একটা কুকুর, কুকুরের সঙ্গে,
এগিয়ে আসছে অস্পষ্ট এক পথচারি


       এখানেই সেই প্রাকৃতিক সত্ত্বার জেগে ওঠা ক্রমশ আবার সার রিয়ালিস্ট চিত্রকল্পের জেগে ওঠা অস্পষ্ট পথচারি কি আসলে কবি নিজেই?

       কিন্তু আমরা পাঠক, নিজেদের অজান্তেই, কবির সঙ্গে এই ভ্রমণে জড়িয়ে পড়েছি শুরুতে যে নৈরাশ্য ছিল যে সংবেদনহীনতা ছিল, যে বৈকল্য ছিল, ভারাক্রান্তের তা আর নেই আমরা জানছি, বুঝছি আগের চেয়ে বড় বড় চোখে আমরা দেখছি

এর পরে আসে, নং কবিতা, যা নিজেই একটুকরো হিরের মত  অসম্ভব কৃতার্থ সংস্থান

ওরা আয়নার কাছে যায়, মুখ দেখে, সাজগোজ করে
ওরা আয়নার কাছে কাঁদে, হাসে
ওরা আয়নাকে আদর করে

ওরা সত্য, ওরা সুন্দর

তোর এসবের বালাই নেই, তোর চিরুণিও নেই

       মনে পড়বেই এখানে , সিলভিয়া প্লাথের মিরার কবিতা মনে পড়বে অসংখ্য কবির অসংখ্য কবিতা কিন্তু সবের মধ্যে শেষ লাইনটি একেবারে নতুন হয়ে ধরা দেবে কারণ এই সিরিজের মূল কথা এখানে সন্নিবিষ্ট হল সামাজিকীকরণের আয়নাটা ঝনঝন করে ভেঙে গেল রাংতায় মোড়া পুতুল গুলো ঝরে পড়ে গেল সত্য আর সুন্দর শব্দের শ্লেষ এসে পাঠকের বুকে বিঁধল দুধ বনাম থুতুর সেই লড়াই মনে আছে? এখানে সত্য আর সুন্দরের আরোপিত ধারণার উল্টোদিকে ঝন ঝন করে এসে পড়ল গাধার ধারণা

কবির যা অভীষ্ট, প্রার্থিত, তা যেন বলা হয়ে গেল কবিতায়

সামারিছোটবেলায় বড় লেখার সামারি করা হত লেখা তাইই

লেখাপড়া হয়, পড়াশোনা করে

বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা তুই বাইরেই থাক

আমিও বাইরে আছি, বাইরেরও বাইরে যেতে চাই

       এই যে দশ নম্বর কবিতা এটা ওই নয় নম্বরের সামারির পরবর্তী বাকি উপসংহার এখানে দাগা বুলনো হল কবির নিজস্ব বক্তব্যেই পাখার সুইচ বন্ধ করার পরও পাখা যেমন খানিকক্ষণ ঘুরতে থাকে, কবির জার্নি শেষ হবার পরও, ভেতরের আসল ফাইন্ডিং বা উপলব্ধিটুকু বেরিয়ে যাবার পর, কয়েকটা শব্দ বা বাক্য থাকেই, সমাপ্তি দেবার জন্য বাকি লাইনগুলো সেই সমাপ্তি টেনেছে শুধু, হয়ত নিজস্ব গতিতে রাশ টানার পরও কয়েক লাইনে নিশ্চিন্ততা, স্থিরতা এনেছে থামার আরাম এনেছে

       কিন্তু জার্নি আমাদের সবার হয়ে উঠেছে ততক্ষণে লক্ষ্য করব কবি এখানে অলংকার ঝেড়েছেন, থোড়াই কেয়ার করেছেন তথাকথিত সুন্দর বাক্যের, একেবারেই পাত্তা দেন নি ছন্দ-মাত্রা-অলংকারকে...নিরাভরণ এবং সংযত এই ভাবনার কেটে চলা পথে, আমাদের শরিক করেছেন অনায়াসে, যেন কিছুই করছেন না এমন ভাবখানা করে

এখানেই কবির সফলতা, তাঁর জিত, তাঁর চূড়ান্ত আত্ম বিশ্বাসের প্রমাণ এখানেই তাঁর সততা

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন